ফুলগাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন চুয়াডাঙ্গার ফুলচাষিরা। বিশ্ব ভালবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসকে সামনে রেখে খেতের ফুল পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুলচাষিরা। তিন দিবস সামনে কড়া নাড়লেও ফুলচাষিদের মুখে হাসি নেই। করোনার দ্বিতীয় ধাপের কারণে কাঙ্ক্ষিত ফুল বিক্রি করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রতি বছর প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষাবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর ও জীবননগর উপজেলায় বেশি চাষাবাদ হয়। এ বছর পুরো জেলায় ৮০ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলর দর্শনা এলাকার এক ফুলচাষি জানান, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ফুলের চাষ করছেন তিনি। প্রতি বছর তার ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ হয়। করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবের কারণে এবার কোনো ফুল কেনাবেচা নেই। খেতের ফুল খেতেই নষ্ট হচ্ছে। এতে প্রায় ২০-৩০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে তার। তবে সামনে বিশ্ব ভালবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে ঘিরে ফুল বিক্রির আশা দেখছেন তিনি।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের শাহিনুর রশীদের ফুলের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, তার বাবা আব্দুর রহিম ফুল গাছের পরিচর্যা করছেন। সারি সারি গাছে ফুল ফুটেছিল। করোনার কারণে ফুল বিক্রি না হওয়ার কারণে বেশির ভাগ ফুল নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি জানান, ৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে গোলাপ, গাঁদা, চেরি, কামিনি, চন্দ্রমল্লিকা ফুলের চাষ করেছেন। করোনাভাইরাসের কারণে গাছ বাঁচানোর জন্য ফুল কেটে কেটে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ফুলের বাজার বসছে না। এতে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিকেলে ছেলে-মেয়েরা ফুলবাগানে সেলফি তুলতে আসেন। কেউ কেউ ফুল ছিঁড়ে নিয়ে যায় আবার পা দিয়ে দলিয়ে ফুল নষ্ট করে দেয়। কিছুতেই তাদের ঠেকানো যাচ্ছে না।
চুয়াডাঙ্গার কেদারগঞ্জ এলাকার ফুলচাষি আলম আলী বলেন, প্রায় ২০ বিঘা জমিতে গ্লাডিওলাস, জারবেরা, গোলাপ, গাদা এবং রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ করেছি। এর আগে প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হতো। মহামারি করোনার কারণে সব কিছু বন্ধ হয়ে গেছে।এ পরিস্থিতিতে প্রতিদিন ফুল কেটে ফেলে দিতে হচ্ছে।
একদিকে ফুল নষ্ট ও শ্রমিকের খরচ, অন্যদিকে বাগান রক্ষণাবেক্ষণের নিয়মিত ব্যয়- সবমিলিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন আলম আলী। করোনা ও আম্ফানের কারণে লোকসান গুণতে হয়েছে তাকে। সামনে তিন দিবসে যদি ফুলের দর ভাল পায় তাহলে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারব।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আলী হাসান বলেন, চুয়াডাঙ্গায় এবার সাড়ে ৮০ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ করা হয়েছে। অন্যান্য আবাদের তুলনায় চুয়াডাঙ্গায় ফুল চাষ কম হয়। এ বছর মহামারি করোনা ও আম্ফানের ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবেন ফুলচাষিরা।
স্বপ্নচাষ/একে
বাংলাদেশ সময়: ১২:০১ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১
swapnochash24.com | swapno chash