করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও লকডাউন চলছে। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হয়ে দেশটিতে এখন চতুর্থ দফায় লকডাউন চলছে। দীর্ঘ সময় ধরে চলা লকডাউনের কারণেই ভারতে অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিকরা পড়েছেন সবচেয়ে বিপদে। একদিকে কাজ না থাকা, অন্যদিকে বাড়িতে ফিরতে না পারায় তাদের দুর্দশা চরমে পৌঁছেছে। এ পরিস্থিতিতে দুবেলা খাবারের সংস্থান করাও অসম্ভব হয়ে পড়েছে অনেক পরিবারের পক্ষে। এ কারণে ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। এবার লকডাউনের কারণে বেতন না পেয়ে কুয়ায় আত্মঘাতী হলেন পরিযায়ী শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ ৯ জন। খবর আনন্দবাজারের
ঘটনাটি ঘটেছে হায়দ্রাবাদের তেলেঙ্গানায়। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার সেখানকার এক কুয়ো থেকে ওই ৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে আছেন একই পরিবারের ছয়জন। তাদের বাড়ি পশ্চিমবঙ্গে। এছাড়া দু’জন বিহারের এবং এক জন ত্রিপুরার বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, দু’মাস ধরে জুটমিল ও অন্য কারখানা থেকে বেতন পাননি এই শ্রমিকেরা। তাছাড়া বাড়িতেও ফিরতে পারছিলেন না। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটা গণ-আত্মহত্যা। কারণ কারও শরীরে আঘাতের চিহ্নও ছিল না।
স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃতদের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মকসুদ আলম ২০ বছর ধরে গোরেকন্টার এক জুট মিলে কাজ করতেন। কারখানা পাশে দু’টি ঘরে সপরিবার বসবাস করতেন তিনি। কিন্তু লকডাউনের কারণে তার বেতন বন্ধ হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হারান আশ্রয়ও।
স্থানীয় এক দোকানদার নিজের গুদামে আশ্রয় দিয়েছিলেন মকসুদের পরিবারটিকে। আশ্রয়কেন্দ্রের পাশের কুয়ো থেকেই পাওয়া গেছে মকসুদ, তার স্ত্রী নিশা, দুই ছেলে সোহেল ও শাবাদ, মেয়ে বুশরা খাতুন এবং তিন বছরের নাতি শাকিলের দেহ। এছাড়া মৃতদের মধ্যে ত্রিপুরার বাসিন্দা শাকিল আহমেদ জুট মিলের গাড়ি চালাতেন। অন্যদিকে বিহারের শ্রীরাম ও শ্যাম অন্য একটি কারখানায় কাজ করতেন। তবে এরা সবাই একই কুয়ায় কীভাবে মারা গেলেন তা নিয়ে চিন্তিত পুলিশ।
বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী কে সি রাও জানিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার জন্য ট্রেন-বাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। হেঁটে যেন কেউ বাড়ির পথ না-ধরেন। তার এই ঘোষণার কয়েক ঘন্টা পরই হায়দ্রাবাদের উপকণ্ঠে গোরেকুন্টা গ্রামের এক কুয়ো থেকে চার জনের দেহ উদ্ধার হয়। শুক্রবার আরও পাঁচ জনের মরদেহ পাওয়া যায়।
স্বপ্নচাষ/আরএস
বাংলাদেশ সময়: ৪:৫৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৩ মে ২০২০
swapnochash24.com | swapno chash